বাংলাদেশের ভূমি তথ্য, আয়তন, জনসংখ্যা ও ইতিহাস এ বিষয়ে জানতে মনেযোগ দিয়ে বসে পড়ুন। কথা হবে উল্লেখিত বিষয় নিয়ে। এশিয়া মহাদেশের মধ্যে একটি ছোট্ট দেশে বাংলাদেশ। কবির ভাষায় যাকে বলা হয়েছে সোনার দেশ। সুজলা সুফলা সরর্ণ পশবিনি সোনার বাংলাদেশ। কবির এই ভাষার যথার্থও রয়েছে এখানে ।
আজকে আমারা বাংলাদেশ এর ভূমি তথ্য সম্পর্কে জানতে পারবো। চারিদিকে সমুজের সমারোহ আর সাপের মতো ছড়িয়ে আছে হাজারো নদী-নালা, খাল-বিল। নদী মাতৃক এই দেশের রয়েছে অনেক ইতিহাস আর ঐতিহ্য। রয়েছে অনেক অর্জন। আজ আমরা এ বিষয় বিস্তারিত জানবো। হাতে এককাপ চা নিয়ে বসেন। আর জানতে থাকুন প্রিয় বাংলার তথ্য।
আয়তন – বাংলাদেশের ভূমি তথ্য
বাংলাদেশ এর আয়তন ১,৪8,৪৬০ বর্গ কিলোমিটার। এই আয়তনের ১,৩০.১৭০ বর্গ কি.মি ভূমি, আর বাকি অংশ মানে ১৮,২৯০ বর্গ কি.মি পানি। ( তথ্য সূত্র উইকিপিডিয়া )
বাংলাদেশ এর জনসংখ্যা
২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশ এর জনসংখ্যা আনুমানিক ১৬,১৩,৭৬,৭০৮ জন প্রায়। এবং ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ১৬,৫১,৫৮,৬১৬ জন প্রায়। ( তথ্য সূত্র উইকিপিডিয়া )
বাংলাদেশের অবস্থান
দক্ষিণ এশিয়ার এই ছোট্ট দেশটির তিন দিকে ভারত, একদিকে বঙ্গপসাগর পশ্চিমে পাকিস্তান । আর এর মধ্যখানে অবস্থিত এই সোনার দেশ । বাংলাদেশ পাকিস্তান ও ভারত মিলে এক সময় ছিলো ভারত উপমহাদেশ। এ বিষয়ে আরো বিস্তর আলোচনা রয়েছে। তাই পড়তে থাকুন আর জানতে থাকুন এ দেশর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। কি ভাবে জন্ম হলো বাংলাদেশর ।
কিভাবে সৃষ্টি হলো বাংলাদেশ
এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে প্রাচীন ও ধ্রুপদী যুগে প্রথমে সমতট ও হলিকেল সহ আরো ভিবিন্ন নামে কিছু জনপদ গড়ে উঠে। এ অঞ্চলটি ছিলো মৌর্য শাসন আমলে মৌর্য সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশ। এই জনপদটি সামুদ্রিক বানিজ্য আর নৌ-শক্তির জন্য ছিলো বিখ্যাত। মধ্যপ্রাচ্য সহ আরো নানান দেশ সিল্ক রপ্তানি করতে এই জনপদগুলিতে।
প্রথম হাজার শতাব্দিতে পাল সাম্রাজ্য সহ আরো নানা বংশ গড়ে উঠে এই জনপদকে কেন্দ্র করে। এবং পরবর্তীতে বখতিয়ার খলজির গৌড় জয়ের পরেই দিল্লি সালতানাত আমলে ইসলাম ছড়িয়ে পড়ে এই ভূখন্ডের নানা প্রান্তরে। তাছাড়া ইউরোপিওরা পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী বাণিজ্যিক দেশ হিসেবে গণ্য করতো এই দেশটিকে । কারণ মুঘল আমলে পুরো পৃথিবীর মোট উৎপাদনের ১২ শতাং বাংলাদেশই হতো। বাংলাদেশ ভূখন্ডটি ১৭৬৫ থেকে ১৯৪৭ সন পর্যন্ত প্রেসিডেন্সি বাংলার অংশ ছিলো।
বাংলাদেশ এর ইতিহাস
১৯৪৭ সনের ভারত বিভাজনের পর বাংলাদেশ নামক জনপদটি পূর্ব বাংলা নামে পরিচিতি পায় । এবং এর পর থেকে শুরু হয় বাংদেশের ইতিহাস। দেশটি হয়ে যায় পাকিস্তান অধিরাজ্যের অন্তর্ভূক্ত পূর্ব পাকিস্তান। আর তখন পাকিস্তানিরা বাংলাদেশের সংস্কৃতি আর ভাষার রিবোধিতা শুরু করে। ১৯৪৭ থেকে শুরু হয় ভাষা আন্দোলন । চলতে থাকে ১৯৫৬ সন পর্যন্ত। তখন এই ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ হয়। তারা পশ্চিম পাকিস্তানের সকল অন্যায়, অত্যাচার, আর নিপিড়নের বিরোদ্ধে রুখে দাড়ায় ।
ভাষার জন্য জীবন দিয়ে ছিলো এদেশের হাজারো তাজাপ্রাণ। পৃথিবীতে একমাত্র বাঙ্গালিরাই ভাষার জন্য জীবন দিয়ে ছিলো। যার ফলে আজো ২১ শে ফেব্রুয়ারী চলে আসলেই শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয় সেই ভাষা সৈনিক দের, যারা জীবন দিয়ে ছিলো এই বাংলা ভাষার জন্য। এইজনই বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর ভিবিন্ন দেশে ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালন করে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা
এ দেশের স্বাধীনতা এ যেন এক রক্তিম ইতিহাস। ১৯৫১ সনের ভাষা আন্দোলনের পর ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম হয় এক নতুন ভূখন্ড এক নতুন নাম। আর এই নাম হলো বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠিত হয় এক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র ও জাতি। এর পর নানা দূর্ভীক্ষ আর প্রাকৃতিক দূযোর্গ এর মধ্য দিয়ে ৯০ এর স্বৈরাচার রিবোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ১৯৯১ সনে সংসদীয় শাসনব্যবস্থা আবারো প্রতিষ্টিত হয়। এর ধারাবাহিকথা আজো অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশের ভাষা
লক্ষ বাঙ্গালির ভাষা বাংলা ভাষা। মাতৃভাষা বাংলাই এই দেশের লক্ষ কুটি মানুষের মনের ভাষা, প্রাণের ভাষা। এই বাংলায় হাসে, বাংলায় কাঁদে, এরা বাংলা বলে কথা। কারণ এরা এই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। এই মাতৃভাষা এজাতির হাজারো তাজা রক্তের দামে কেনা। এজন্য কবি লিখেছেন- আমি বাংলার গান গাই, আমি বাংলায় হাসি; বাংলায় কাঁদি , আমি আমার আমিকে চিরদিন, এই বাংলার মাঝে খোঁজে পাই।
সংস্কৃতি
প্রতিটা জাতি বা গোষ্টির আলাদা আলাদা সংস্কৃতি রয়েছে। একি ভাবে বাঙ্গালি জাতির ও নিজেস্ব সংস্কৃতি রয়েছে। আর এই বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস সহস্র বছরের বেশি সময়ের পুরনো। এ জাতির ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন হলো দোহার সঙ্কলন চর্যাপদ। এবং মধ্য যুগে বাংলা ভাষায় কাব্য, লোকগীতি, ও পালাগানের শুরু হয়। পরবর্তীতে গদ্য সাহিত্য ও বাংলা কাব্যের ব্যাপক বিকাশ হয়। কাজী নজরুল ইসলাম এ দেশের জাতীয় কবি। তাঁর হাত ধরে বাংলা ভাষায় সাহিত্যের প্রসার হয়।
মুদ্রা
এখানে মুদ্রা হলো টাকা, পয়সা, আনা, ইত্যাদি। একশত আনায় এক পয়সা। একশত পয়সায় এক টাকা। এভাবেই ধারাবাহিক টাকার হিসবা করা হয়।
বাংলাদেশের রাজধানীর নাম কি ?
বাংলাদেশের বর্তমান রাজধানীর নাম ঢাকা। পূর্বে এর নাম ছিলো জাহাঙ্গির নগর। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরেই ঢাকা শহর অবস্থিত।
নৃগোষ্ঠী
এদেশে বাঙ্গালি সহ রয়েছে অনেক নৃগোষ্ঠী । এদের মধ্যে রয়েছে- চাকমা, বিহারি, মারমা, সাঁওতাল, মুরং, রাখাইন, তঞ্চঙ্গ্যা, বম, ত্রিপুরা, খুমি, কুকি, গারো, বিষ্ঞুপ্রিয়া মণিপুরি, ভারতীয়, ও চীনা।
ধর্ম
এখানে মূল জনসংখার প্রায় ৯১.০৪% মানুষ মুসলমান। যার কারণে এর দেশের রাট্রীয় ধর্ম ইসলাম। এছাড়াও রয়েছে হিন্দু, ৭.৯৫%। আছে বৌদ্ধ ০.৬%, ০.৪% খ্রিষ্টান, এবং অন্যান্য ধর্মলম্বী রয়েছে ০.১%।
আরো পড়ুন: ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ পদ্ধতি
বাংলাদেশের ওয়েব সাইট কোনটি ?
বর্তমানে প্রতিটি দেশের সরকারের একটি ওয়েব সাইট থেকে থাকে। তাছাড়া এখন মানুষ সব সময় অনলাইনে সকল তথ্য অনুসন্ধান করে। যেমন আপনি আমার এই আর্টিকেলটি পড়লেন। তেমনি ভাবে বাংলাদেশর একিটি ওয়েব সাইট রয়েছে। জাতীয় তথ্য বাতায়ন।
বাংলাদেশ এর ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইট কোনটি ?
বাংলাদেশে বর্তমানে স্মার্ট ভূমি সেবা চালু আছে। যার ফলে মানুষ এখন ঘরে বসে যে কোনো ভূমি সংক্রান্ত সেবা নিতে পারে । বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইট (www.land.gov.bd) হলো। এখানে বাংলাদেশের ভূমি তথ্য সংক্রান্ত সকল বিষয় জানতে পারবেন।
ইতিকথা
বাংলাদেশ একটি সবুজ সমতট। আর এই সবুজ সমতটে গড়ে উঠেছে এক সবুজ ভূমি এক নতুন নাম, এই নাম হলো বাংলাদেশ। হাজারো বাঙ্গালির মাথা গুঁজার টাই। এখানে সকলে সূর্যিমামা বিশার আলো নিয়ে পুব আকাশে উঠি, সন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশে রক্তিম লাল হয়ে আবার অস্থ যায়। এই বাংলার জমিগুলো কখনো সবুজ আর কখনো সোনালী হয়। ফাগুনে আমের বনের ঘ্রাণ তোমাকে পাগল করে দেবে। অগ্রায়নে ভরা ক্ষেতে আপনার চোখ আটকে যাবে। আর বর্ষার মৌসুমে অথৈই পানি। মনে হবে এখানে শুধু পানিই আছে কোন জনপদ চোখে পড়বেনা অনেক এলাকা জুড়ে।
বাংলাদেশের ভূমি তথ্য আর্টিকেলটি আমরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সংগ্রহ করেছি। যদি এর কোনো তথ্য ভূল বা মিথ্যা হয় তবে এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী হবে না। প্রায় সকল তথ্য উইকিপিডিয়া থেকে নেয়া।