ই নামজারি আবেদন কিভাবে করবো

ই নামজারি আবেদন কি ভাবে করবো করবেন । আমার আজ এ বিষয়ে পূরোপুরি জানবো। কখন আমাদের প্রয়োজন পড়বে এই কাজ করার। প্রথমেই বলে রাখি জমির মালিকানার জন্য এই বিষয়টি অতিগুরুত্বপূন্য । কারন যদি কোন ব্যাক্তি জমি রেজিষ্ট্রি করার পর নিজের নামে রেকর্ড না করায় বা নিজের খতিয়ান প্রস্তুত না করে তবে তার জমির মালিকানায় খুব সহযে অন্য ব্যাক্তি হস্তক্ষেপ করতে পারে।

নামজারির আবেদনের ধাপ সমূহ

জমি খারিজ বা নামজারি করত হলে নির্দিষ্ট কিছু ধাপ অনুস্মরণ করতে হবে। ধাপগুলো আমি ধারাবাহিক বর্ণনা করছি। এই ধাপগুলো আপনাকে জেনে রাখতে হবে। নতুবা আপনি নামজারি করতে গেলো অসুবিধার মধ্যে পড়তে পারেন। তাই বিষয় গুলো ভালো ভাবে বুঝে নিন। সব বিষয় জানা হয়ে গেলো নিছে লিংক দেওয়া আছে, এখান থেকে আবেদন বা নামজারির কাজ শুরু করুন।

ই নামজারি আবেদন প্রথম ধাপ

অনলাইনে আবেদন হলো নামজারির প্রথম ধাপ। যদি আপনি ই নামজারি আবেদন না করেন তবে এর কার্যক্রম শুরুই হবে না। কারণ আপনি আবেদন করার পর এই বিষয়টি আপনার উপজেলার নির্দিষ্ট এসিলেন্ড এর কাছে যাবে। এবং তিনি এই আবেদন নির্ধারিত ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রেরণ করবেন। এর পর ধারাবাহিক কাজ চলবে। আর আপনি প্রতিটি বিষয় ঘবে বসে আপনার মোবাইল থেকে দেখতে পারবেন।

দ্বীতৃয় ধাপ ই নামজারি

ই নামজারি আবেদন করার পর। এই আবেদনটি নির্দিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রেরণ করে দেয়া হয়। এবং সেখান থেকে এই আবেদনের সত্যাতা যাচাই করা হয় । মানে আপনি যে আবেদন করেছেনে। এই আবেদনের সাথে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা। এই জমিতে কোনো আপত্তি আছে কিনা। এই জমির শরিক আছে কিনা। এই বিষয় গুলো দেখা হয়।

নামজারি তৃতীয় ধাপ

শুনানীর জন্য সরেজমিনে উপস্থিত হওয়া গুরুত্বপূন্য একটি ধাপ। ই নামজারি করার জন্য সব শেষ ও গুরুত্বপূন্য একটি ধাপ হলো জমির মালিক বা আবেদনকারী শুনানীর জন্য উপস্থিত হয়ে জমির সকল কাগজপত্র দেখাতে হবে। এবং ডিসিআর ফি প্রদান করে, তারপর ই নামজারি খতিয়ান বা খারিজ খতিয়ান সংগ্রহ করতে হবে।

উচিৎ এবিষয়ে ভালোভাবে জানা এবং এই প্রয়োজনীয় কাগজ নিজের সংগ্রহে রাখা। কিভাবে আবেদন করবেন নিম্নে বর্ণনা করা হলো। কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক-

ই নামজারি আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন

কি কি লাগবে ই নামজারি আবেদন করতে

কিভাবে আদেন করবেন নিচে তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

  • ১। নামজারির জন্য প্রথমেই প্রয়োজন জমির নির্দিষ্ট মালিক হওয়া। মানে আপনি যে জমি আপনার নামে রেকর্ড করাতে চান ঐ জমি আপনি ক্রয় করেন বা উত্তরাধিকার সূত্রে যে ভাবেই মালিক হোন, সেই মালিক হওয়ার প্রমাণ প্রত্র দলিল সংগ্রহ করা। কারন মালিক হওয়ার দলিল যদি না থাকে তবে আপনি এই গুরুত্বপূণ্য কাজ করতে পারবেন না। তাছাড়া বর্তমানে নতুন আইন অলরেডি বলা হয়েছে যে , দলিল যার জমি তার। তাই প্রথমেই নিজের নামে একটা দলিল থাকতে হবে।
  • ২। ভোটার আইডিকার্ড থাকতে হবে। কারণ বর্তমানে ভূমি মন্ত্রণালয় ভূমি সেবাকে অনেক দূর এগিয়ে নেয়ার জন্য প্রত্যেক জমির মালিকের সঠিক তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে। যাতে করে একজন মালিক ঘরে বসে তার জমির সকল তথ্য দেখতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দিচ্ছে ভূমি। তাই আপনি আপনার ভোটার আইডিকার্ড সংগ্রহে থাকতে হবে।
  • ৩। খতিয়ানের কপি আপনার সংগ্রতে থাকতে হবে। মানে আপনি যে মালিকের কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছেন বা পেয়েছেন সেই মালিকের নামের পর্চা আপনার কাছে থাকেতে হবে। যাতে করে উক্ত রেকর্ড থেকে আপনার নির্দিষ্ট জমির পরিমান কেটে নিয়ে আপনার নামে রেকর্ড করা যায় । নতুবা এই খতিয়ান না পাওয়া গেলে আপনি নামজারি করতে পারবেন না। কারণ এই কাগজ দ্ধারা নিশ্চিত করা হয় এখানে কত টুকু জায়গা আছে আপনার আবেদনকৃত পরিমান এখানে অবশিষ্ট আছে কি না।
  • এছাড়াও আপনার এক কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি লাগবে। এবং সচল একটি মোবাইল নাম্বার যার মাধ্যমে আপনার কাজের আপডেট আপনাকে জানানো জায় ।

ই নামজারি আবেদন যেভাবে করবেন-

আবেদন করার জন্য প্রথমেই আপনাকে ভূমি মন্ত্রণালয় এর সাইটে ভিজিট করবেন, অথবা ই-নামজারি লিখে যে কোনো ব্রাউজারে সার্চ করবেন। এবার নিচের পিকচার লক্ষ্য করুন

নামজারি আবেদন কি ভাবে করবেন

এবার ছবিতে দেয়া পিকচারের ধাপ গুলো খেয়াল করুন নামজারি আবেদন লিখা এই ছবিতে ক্লিক করুন । ধারাবাহিক ভাবে পরবর্তী প্রতিটা পদক্ষেপ ফলো করুন এবং বিষয় সঠিক ভাবে পূরণ করুন। খেয়াল রাখবেন কোনো তথ্য যেন ভূল না হয়। নতুবা আপনার ই নামজারি আবেদন বাতিল হতে পারে।

আরও পড়ুন: ভুমি উন্নয়ন কর পরিশোধ পদ্ধতি

জমির মালিকের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার , এবং এন আই ডি নাম্বার ভালো করে দেখে সঠিক জায়গায় লিখুন। তারপর পরবর্তী ধাপে ক্লিক করুন। এবং জমির পরিমান দলিল এবং পর্চা দেখে নির্দিষ্ট জায়গায় বসান। সব শেষ আপনি আপনার ডকুমেন্ট সংযুক্ত করুন। এবং নতিপত্র এর ধরণ নির্বাচন করুন। সকল ধাপ পরিপূর্ন ভাবে শেষ হলে এবার সাবমিট করুন। সরসরি নামজারির আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন

এবার নিচের ছবিটি লক্ষ্য করুন যেহেতু আপিন নতুন আবেদন করবেন তাই নামজারি আবেদন লিখা অংশে ক্লিক করুন অথবা এই লিংকে ক্লিক করুন

এবার উপরে দেয়া পিকচারের ধাপ গুলো খেয়াল করুন এবং ধারাবাহিক ভাবে প্রতিটা বিষয় সঠিক ভাবে পূরণ করুন। খেয়াল রাখবেন কোনো তথ্য যেন ভূল না হয়। নতুবা আপনার নামজারি বাতিল হতে পারে।

ই নামজারি আবেদন নিষ্পত্তির ধাপ সমূহ

ই- নামজারির জন্য আবেদন করা হয়ে গেয়ে নামজারি আবেদন নিষ্পত্তির জন্য নিচের ধাপ গুলো অনুস্মরন করা হয। তাই আমি মনে করি এই বিষয় গুলো জানা প্রয়োজন। সুতরাং ধাপগুলো ভালো করে বুঝেন। আপনি চাইলেই যেকো সময় আবেদন যাচাই করতে পারেন। নিচের দেয়া ছবিটি দেখ-

নামজারি আবেদন নিষ্পত্তির ধাপ সমূহ

ছবিতে দেয়া প্রতিটি ধাপ অনস্মরণ করে নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি হয়।

ভূমি অফিসে আবেদন জমা

ভুমি অফিসে আবেদন জমা নামজারি নিষ্পত্তির প্রথম ধাপ। আবেদনকারি আবদেন শেষে আবেদন ফি ও নোটিশ জারি ফি একত্রে ৭০ টাকা প্র্রদান করার পর স্বয়ংক্রিয় ভাবে আবেদনটি ভূমি অফিসে জমা হয়ে যাবে। এবং ২-৩ দিনের মধ্যে আবেদনকারির মোবাইল নাম্বারে টাকা জমার রসিদ তৈরি হয়ে এস এম এস চলে যাবে।

ভূমি অফিসে প্রথম আদেশ

আবেদন অনলাইনে জমা হয়ে গেলে সহকারি কমিশনার ভূমি নামজারির আবেদন টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রেরণ করেন। উক্ত আবেদন এর সঠিকতা যাচাই করে স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে এই আবেদনটি পুনঃরায় সহকারি কমিশনার ভূমির কাছে পাঠানো হয়। আর এটা হলো নামজারি আবদন নিষ্পত্তির দ্বিতীয় ধাপ।

এভাবে ভূমি এক দুই করে তিনটি আদেশ পাঠানো হয ইউনিয়ন ভুমি অফিসে । আর এই তিনটি আদেশের প্রতিবেদন প্রেরণ হলে, খতিয়ান চুড়ান্ত হওয়ার জন্য চলে যায়।

কিউ আর কোড যুক্ত খতিয়ান বা অনলাইন খতিয়ান

উপরে উল্লেখিত সকল ধাপ শেষ হলে। সবশেষ নামজারি আবেদনটি কিউ আর কোড যুক্ত খতিয়ান বা অনলাইন খতিয়ান হিসাবে প্রস্তুত হয়ে যায়। ডিসি আর পি প্রদান করার পর যে খতিয়ান দেয়া হয় সেটি হলো নামজারি খতিয়ান। এবং ডিসিআর ফি প্রদানের পর যে খতিয়ান টি প্রস্তত হবে সেটি আপনি চাইলে অনলাইন থেকে ঘরে বসে ডাইনলোড করে নিতে পারবেন। নামজারির সর্বশেষ অবস্থা দেখতে বা ই নামজারি যাচাই করতে নিচের লেখায় ক্লিক করুন।

নামজারির সর্বশেষ অবস্থা দেখেন

এ পর্যায়ে ফরমটিতে জমির মালিকের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার ভালো করে দেখে সঠিক জায়গায় লিখুন। তারপর পরবর্তী ধাপে ক্লিক করুন। এবং জমির পরিমান দলিল এবং পর্চা দেখে নির্দিষ্ট জায়গায় সঠিক তথ্যটি বসান।

সর্বশেষ আপনি আপনার ডকুমেন্ট সংযুক্ত করুন এবং নতিপত্র এর ধরণ নির্বাচন করুন। সকল ধাপ পরিপূর্ন ভাবে শেষ হলে এবার সাবমিট করুন ।

ইতিকথা

আজকের এই আর্টিক্যালে আমার জানতে পারলাম কি ভাবে ই নামজারি আবেদন করতে হয়। কি কি লাগবে এই নামজারি আবেদনে। যদি আপনি এর পরেও নামজারি কার্যক্রমে ব্যর্ত হোন। তবে আমাদের সাথে সোস্যাল মিডিয়ায় যুক্ত হতে পারেন। এবং আপনার সমস্যা আমাদের সাথে যোগাযোগ করে এর সমাধান নিতে পারবেন। যদি ই নামজারি আবেদন এর লিখাটি আপনার কাজে আসে তবে অন্যদের জন্য শেয়ার করতে ভূলবেন না।

জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

  • নামজারি আবেদন করতে কত টাকা লাগবেে
  • উত্তর- নামজারি আবেদনে প্রথমে আবেদন ফি ও নোটিশজারী ফি হিসেবে ৫০ টাকা লাগবে।
  • নামজারি ফি কি অনলাইনে দেয়া যাবে
  • উত্তর- হ্যা । নামাজারি ফি অনলাইনে বিকাশ. রকেট, নগদ সহ অনলাইনে যে কোনো মাধ্যমে দিতে পারবেন।
  • নামজারিতে মোট কত টাকা লাগবে
  • উত্তর- নামজারিতে মোট ১১৭০ টাকা লাগবে।
  • আবেদনের জন্য প্রথমে কি করতে হবে
  • উত্তর- নামজারি আবেদনের জন্য প্রথমে কোট ফি ২০ টাকা দিতে হবে।
Scroll to Top