নামজারি পর্চা বা খারিজ পর্চা যাই বলুন। যেকোনো পর্চা এখন ঘরে বসে সংগ্রহ করা সম্ভব। তবে নামজারি পর্চা প্রথম থেকেই এস.এ বা আর.এস পর্চার মতো পাওয়া যাবেনা। তবে আজাকের আর্টিক্যাল এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে নামজারি পর্চা কখন কোথায় পাওয়া যায়। আর কতক্ষন একদম বিনা মূল্য বার বার সংগ্রহ করতে পারবেন।
তাছাড়া কখন থেকে টাকা পেমেন্ট করতে হবে। কোথায় থেকে সংগ্রহ করতে হবে। সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারি আলোচনা করা হবে। এবং এমন কিছু বিষয় আলোচনা করবো যা জানা আপনার একান্ত জরুরী। তাই পুরো লিখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
নামজারি পর্চা কি ?
নামজারি পর্চা হলো এস.এ বা আর.এস কিংবা বি. আর.এস জরিপের পরে। ক্রয়কৃত ভূমি ক্রেতার নামে রেকর্ড করার নথি বা ডকুমেন্ট। মানে সরকারি জরিপের পরে যে জমি গুলো ক্রয় বিক্রয় করা হয়। সে সব জমির বর্তমান মালিকের নামে রেকর্ড করার জন্য যে রেকর্ড প্রস্তুত করা হয়। তাকে নামজারি পর্চা বলে। বর্তমানে এই পর্চার কার্যক্রম অনলাইনের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে।
আর নামজারি কার্যক্রম অফলাইন থেকে অনলাইনে আসায় । নামেও এসেছে পরিবর্তন। মানে আগে ছিলো নামজারি, আর বর্তমান নামে ই-নামজারি। মূলকথা হলো ই-নামজারির মাধ্যমে তৈরিকৃত পর্চার নাম হলো নামজারি পর্চা।
আরো পড়ুন:- নতুন নিয়মে নামজারি আবেন 2025
নামজারি পর্চা কিভাবে সংগ্রহ করবো
যে কোনো পর্চা সংগ্রহের নিয়ম প্রায় একই। তবে আজকের আলোচিত পর্চা সংগ্রহ করার জন্য দুটি নিয়ম চালু আছে। প্রথমটা হলো যদি নামজারির তিন মাসের মধ্যে সংগ্রহ করতে চান। তবে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা থেকে একবার ডিসি আর ফি প্রদান করার মাধ্যমে যতবার ইচ্ছা তথবার সংগ্রহ করতে পারেন।
তিন মাসের মধ্যে আর কোনো পেমেন্ট করতে হবে না। আপনি যত খুশি অনলাইন থেকে নিতে পারবেন। তবে তিন মাস পরে নিয়ম পরিবর্তন হয়ে যাবে। মানে অন্যান্য পর্চার মতো ই পর্চা সার্ভিসে থেকে নিতে হবে। আর সেখানে প্রতিবারই আপনারকে পেমেন্ট করতে হবে। অনলাইন কপি হলে একশত টাকা, আর সার্টিফাইড কপি নিতে হলে একশত চল্লিশ টাকা পেমেন্ট করতে হবে।
কি কি লাগবে সংগ্রহ করতে
যদি আপনি নামজারির তিন মাসের মধ্যে সংগ্রহ করতে চান। তবে আপনি সেটা নামজারির সর্বশেষ অবস্থা থেকে আবেদন নাম্বার ও আপনার মোবাইল নাম্বার বা আবেদনে ব্যবহৃত ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার দিয়ে সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
আর যদি তিন মাস পার হয়ে যায়। সেক্ষেত্রেও আপনার মোবাইল নাম্বার ও ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন পড়বে। প্রথমে ভূমি মন্ত্রনালয়ের সাইটে যেতে হবে। পরে রেকর্ড থেকে ই পর্চার লিংকে যেতে হবে। মানে dlrms.land.gov.bd এই লিংকে যেতে হবে। এবং সেখান থেকে অন্যান্য পর্চার মতো সকল তথ্য প্রদান করার মাধ্যমে আপনি সেটা সংগ্রহ করতে পারেন।
খতিয়ানে করণীয় ভূল সংশোধন কিভাবে করবো
নামজারি আবেদনের পর যদি খতিয়ান প্রস্তুন হয়ে যায়। আর দেখা যায় পর্চার মধ্যে কোনো রকম ভূল রয়েছে। তাহলে আপনি ডিসিআর ফি প্রদান করার পূর্বে সেটা সংশোধন করতে পারবেন। তার জন্য করণীয় ভূল সংশোধন অপশন থেকে প্রথমে আবেদন করতে হবে। তখন সহকারী কমিশনার ভূমি আপনার আবেদন বিবেচনা করবেন।
যদি আপনার আবেদন গ্রহনযোগ্য হয় । তাহলে ভূল সংশোধন করে পুনঃরায় খতিয়ান প্রস্তুত করা হবে। আর যদি আপনার আবেদন অবিবেচিত হয়ে তখন আপনার খতিয়ান আগের মতই থেকে যাবে।
অথবা আপনি সরাসরি সহকারি কমিশনার ভূমি এর কার্যালয় হতে নামজারি পর্চা এর যে কোনো ভূল সংশোধন করে নিতে পারবেন।
নামজারি পর্চা/খতিয়ান কি
পর্চা বা নামজারি খতিয়ান একই জিনিস। তাই নামজারি খতিয়ান নিয়ে বিস্তারিত আর আলোচনার প্রয়োজন নেই। নামজারি খতিয়ান বা পর্চা সংগ্রহ করার লিংক উপরি দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
নামজারি খতিয়ান চেক করবো কি ভাবে
খতিয়ান চেক বা নামজারি পর্চা চেক করার নিয়ম একই। তার জন্য আপনি দুইভাবে চেক করতে পারেন। প্রথমত পর্চায় দেয়া আবেদন নাম্বার অথবা কিউ আর কোড এর মাধ্যমে। আর দ্বিতীয়তো আপনার নিকটস্থ ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে । আপনি যদি সেখানে যান আর আপনার খতিয়ান নাম্বার বলেন। তাহলে তারা আপনার খতিয়ান বা নামজারি পর্চা দুই ভাবে চেক করে দিতে পারবে।
প্রথমত অনলাইনে। মানে তারা তাদের অফিস লগইন এর মাধ্যমে চেক করে নিতে পারবে আপনার হাতে থাকা খতিয়ান অনলাইনে আছে কি না। আর দ্বিতীয়তো তারা দেখে নিতে পারবে তাদের বলিউমে এই খতিয়ান লিখা আছে কিনা।
শেষকথা
নামজারি বা ই নামজারি কিংবা আর.এস বা এস.এস খতিয়ান সবগুলোই হলো একই জিনিস। কেই বলে পর্চা আর কেই বলে খতিয়ান। পার্থক্যটা শুধু উচ্চারণে। তবে নথিগুলো একই। তবে আর.এস বা এস.পর্চার মতো নামজারি খতিয়ান একই ভাবে প্রস্তুত করা হয় না। কারণ আর.এস বা এস.এ সরকারি সার্ভের মাধ্যেমে প্রস্তুত করা হয়। আর নামজারি খতিয়ান যদিও সরকারি তবে সেটা ব্যক্তির আবেদনের মাধ্যমে তৈরী করা হয়।