নামজারি বা খারিজ বিষয়ে যে সকল বিষয় জানা জরুরী। সে সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে আজকের এই আর্টিক্যালে। যদি মনোযোগ দিয়ে পুরোটা পড়েন । তাহলে আপনি নিজেই করে নিতে পারবেন আপনার নামজারি বা খারিজের কাজ।
যদি আপনি বিস্তারিত না জানেন । তাহলে আপনাকে দালালেল কপ্পরে পড়তে হবে। এবং আপনার অতিরিক্ত টাকা ব্যায় হবে। তারপরও কাঙ্গিত সেবা আপনি সঠিক ভাবে পাবেন না। চলুন শুরু করা যাক—-
যা থাকছে এই আটিংক্যালে
- নামজারি আবেদন কিভাবে করবেন।
- যে সকল ভূল করলে আপনার নামজারি হবে না।
- নামজারিতে কি কি লাগে।
- নামজারি বা খারিজ কেন করবেন।
- কত টাকা লাগে।
- খাজির পর্চা হাতে পাওয়ার পর আর কি কি কাজ করতে হয়।
- যে ভূল গুলো করলে খারিজ করার পরেও আপনার ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে যায়।
- নামজারি বাতিল হলে করণীয়।

নামজারি বাতিল হলে করণীয়
বিস্তারিত আলোচনার শুরু শেষ থেকেই করি। অনেক সময় দেখা জান আবেদনের পরে । স্থানীয় অফিস থেকে প্রতিবেদন বা প্রস্তাব পত্র পাঠানোর পরেও। আমাদের আবেদন বাতিল বা নামঞ্জুর হয়ে যায়।
তখন আমাদের কি করণীয় আমারা বুঝে উঠতে পারিনা। আসুন জেনে নিই তখন আমাদের করণীয় কি। প্রথমই আপনি আপনার আবেদন ট্রাকিং করুন। মানে আবেদনের সর্বেশেষ অবস্থা যাচাই করুন। আপনি দেখতে পারবেন আপনার আবেদন না মঞ্জুর এর কার বিস্তারিত লিখে দেয়া হয়েছে।
সেখানে উল্লেখিত বিষয় গুলো সমাধান করে যদি আপনি আবার আবেদন করেন। তবে অবশ্যই আপনার আবেদন মন্জুর করা হবে।
আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা দেখতে পড়ুন
যে ভূল করলে আপনি ঝামেলায় পড়তে পারেন
নামজারি করার পর প্রায় ভূমি মালিক কিছু ভূল করে থাকেন। যেটা আমি আমার বাস্তব অভিজ্ঞাতা থেকে বলছি। বর্তমানে অনলাইনে আবেদন করে নামজারি মন্জুর হলে । খতিয়ান ডাউনলোড করে অনেকই ঘরে রেখে দেন।
আর মনে করেন কাজ শেষ হয়ে গেছে। আর ভূলটা সেখান থেকেই শুরু হয়। কারণ অনলাইন থেকে খতিয়ান ডাউলোড করার পরে। আরো কিচু গুরুত্বপূণ্য কাজ বাকী থাকে। যা আমরা অনেকেই জানিনা।
নামজারি খতিয়ান পাওয়ার পরে । আমাদের কাজ হলো সেই খতিয়ান স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে । তাদের নির্ধারিত নামজারি বলিউমে লিপিবদ্ধ করানো।
কারণ যখন আপনি এই কাজ করবেন তখন আগত খতিয়ান থেকে আমার নামে আসা জমি টুকু কর্তন করা হয়। যার ফলে এই জমি আর অন্য কেউ নামজারি করাতে পারবেনা।
তারপরের কাজ হলো উক্ত খতিয়ানে খাজনা প্রদান করা। যদি আপনি খাজনা প্রদান করেন । তাহলে সরকার নিশ্চিত হবে এই জমি আপনার দখলে আছে।
খাজির পর্চা হাতে পাওয়ার পর আর কি কি কাজ করতে হয়
উপরের অংশে মানে যে ভূল করা যাবেনা এই পেরায় বিস্তারি বলে দেয়া হয়েছে। এখানে শর্টকার্ট আবার বলছি। খারিজ বা নামজারি পর্চা হাতে পাওয়ার পর স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে সেই খতিয়ান নামজারি ভলিউমে লিপিবদ্ধ করাবেন। এবং উক্ত খতিয়ানে খাজনা প্রদান করে রশিদ সংগ্রহ করবেন।
কত টাকা লাগে নামজারি করতে
নামজারি করতে মোট ১১৭০ টাকা লাগে। প্রথমে আবেদন শুরুর সময় ২০ টাকা কোর্ট ফি বাবদ প্রদান করতে হয় । আবেদন সাবমিট করার পর ৫০ টাকা আবেদন ফি প্রদান করতে হয়। সবশেষ খতিয়ান প্রস্তুত হওয়ার পরে ১১০০ টাকা ডিসিআর ফি প্রদান করে খতিয়ান সংগ্রহ করতে পারবেন।
খারিজ বা নামজারি কেনো করবো
আপনার ক্রয়কৃত কিংবা হেবাকৃত জমি যদি আপনার নিজের নামে রেকর্ড না হয় । তাহলে খারিজ/নামজারি করতে হয়। অথবা আপনি নতুন কোনো জমি ক্রয় করলেন । কিন্তু উক্ত জমি বিক্রেতার নামে রেকর্ড রয়েগেছে।
এখন আপনার নিজের নামে রেকর্ড প্রস্তুুত করতে। এবং পূর্বের মালিকের নাম কর্তন করতে। আপনাকে এই প্রসেস অবলম্বণ করতে হবে।
নামাজরি করতে কি কি লাগবে
নামজারি আবেদন করতে মূলত দলিল প্রদান ডকুমেন্ট। তারপরে লাগবে অন্যান্য বিষয় গুরো নিচে বিষয় গুলো ধারাবাহিক ভাবে দেয়া হলো–
- ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাইটে আপনার নিজের নামে মানে যার নামে নামজারি করতে চান তার নামে নিবন্ধন করতে হবে।
- যে জমি নামজারি করতে চান সে জমির মূল দলিল লাগবে। ফটোকপি গ্রহণ যোগ্য নয়। উত্তরাধিকার সূত্রে নামজারি হলে দলিলের প্রয়োজন নাই। তবে উত্তরাধিকার সনদ লাগবে।
- যার নাম কর্তন করতে চান তার নামের পর্চা।
- আবেদনকারীর ছবি।
ইত্যাদি কাগজ গুলো থাকলেই আপনি খারিজ করতে পারবেন। অন্যতায় আপনি আবেনদ করতে পারবেন না।
আবেদনে যে ভূলগুলো করা যাবেনা
আবেদন করার সময় যে ভূল করা যাবেনা। অনেকই আবেদনের সময় দলিলের ফটোকপি স্ক্যান করে সংযুক্ত করেদেন। মনে রাখবেন যদি আপনি এই ভূলটি করেন। তাহলে আপনার আবেদন নামঞ্জুর হিসাবে বিবেচিত হবে।
আরেকটা ভূল করে থাকি আমরা। আবেদনে খতিয়ানের কপি সংযুক্ত করিনা। এই ভূলটা করা যাবেনা।
এছাড়াও যদি আপনি কোনো ভূয়া কাগজ সংযুক্ত করেন। কিংবা অস্পষ্ট কোনো কাজগ সংযুক্ত করেন । তবে আপনার আবেদনটি নাম মন্জুল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ভূয়া কাগজ সংযুক্তির জন্য আপনার উপর নেয়া হতে পারে আইনি পদক্ষেপ। তাই সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
নামজারি আবেদন কিভাবে করবো
আপনি মূল কিভাবে আবেদন করতে হয় সে বিষয় হয়তো খোজতে এসেছেন। চিন্তার কারণ নেই আপনি এখান থেকেই আবেদন করেতে পারবেন। উপরের বিষয় গুলো জানা জরুরী তাই বর্ণনা করলাম।
কারণ প্রায় ভূমির মালিক শুধু খতিয়ান সংগ্রহ করে বসে থাকেন। যার ফলে কাঙ্গিত সেবাটি পরিপূর্ণতা পায়না। কিভাবে আবেদন করতে হয়ে সে বিষয় জানতে চাইলে আমাদের সাইটি বিস্তারিত আলোচনা করা আছে। সেটা দেখে নিতে পারেন।
আবেদনের পর করণীয় ভূল সংশোধন
নামাজারি আবেদন সাবমিট করার পরে দেখা গেলো আপনি কোনো একটি ভূল করে ফেলেছেন। যেমন আপনি জমির পরিমাণ বেশি অথবা কম দিয়ে দিয়েছেন। অথবা আপনার নামের বানান ভূল হয়েছে।
যদি এমটি হয়ে থাকে । তাহেল প্রস্তাব পত্র রেডি হওয়ার পর। আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা থেকে খতিয়ানে করনীয় ভূল সংশোধন অপশন থেকে আপনি সেটা করে নিতে পারেন। এমন কি আপনি চাইলে আপনার ভূলে যাওয়া কোনো ডকুমেন্ট সংযুক্ত করতে পারেন।
খতিয়ান প্রস্তুন হওয়ার পর করণীয় ভূল সংশোধন
যদি খতিয়ান প্রস্তুত হওয়ার পর আপনার মনে হয়ে বা চোখে পড়ে। প্রস্তুতকৃত খতিয়ানে ভূল রয়েছে। তাহলে ডিসিআর পেমেন্ট করর আগে আপনি করণীয় ভূল সংশোধনের জন্য আবেদন করুন।
যদি ডিসিআর পেমেন্ট করে ফেলেন তাহলে বিষয়টি জটিল হবে। তাই ডিসিআর প্রদান করার পূর্বে আপনি খতিয়ান ভালো করে দেখে নিবেন। যদি ভূল থাকে সেটা সংশোধ করে । তারপর ডিসিআর ফি প্রদান করুন।
ইতিকথা
আজকের এই আর্টিক্যাল দ্বারা নামজারির বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। কিভাবে আবেদন করবেন সে বিষয়ে জানাতে পড়ুন। আবেদনের বর্তমান বা সর্বশেষ অবস্থা কিভাবে জানবেন সে বিষয়ে উপরে লিংক দেয়া আছে। তাছাড়া নামজারি খতিয়ানের করণীয় ভূল কিভাবে সংশোধ করতে হয়।
সেটা নিয়ে উপরে দুইটি মাধ্যম আলোচনা করা হয়েছে। নামজারি খতিয়ান সংগ্রহের পর আমাদের করনীয় বিষয় গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
উক্ত আর্টিক্যালটি যদি আপনার কাজে আসে। তাহলে আপনার বন্ধুদের কে শেয়ার করুন। জন সচেতনার স্বার্থে সোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
FAQ
- নামজারি আবেদন কি ভাবে করবো ?
- উত্তর- নামজারি আবেদন করতে ক্লিক করুন। কি ভাবে আবেদন করবেন বিস্তারিত জানতে উপরের আর্টিক্যাল পড়ুন।
- উত্তরাধিকার সূত্রে নামজারি আবেদনের জন্য কি দলিল লাগবে ?
- উত্তর- না উত্তরাধিকার সূত্রে নামজারি আবেদনের জন্য দলিল লাগবে না। শুধু উত্তরাধিকার সনদ লাগবে।
- শুনানীর তারিখ না পেলে কি করবো ?
- উত্তর- স্থানীয় উপজেলা ভূমি অফিসে যোগাযোগ করুন।